অনন্য কথা প্রতিবেদনঃ রানী ভিক্টোরিয়া হিমোফিলিয়া রোগের বাহক ছিলেন এবং তার বংশের অনেকে এই রোগে আক্রান্ত হয়, তাই হিমোফিলিয়াকে রাজকীয় রোগ বলা হয়ে থাকে।
হিমোফিলিয়া হলো অনিরাময়যোগ্য রক্তের আরেকটি বংশানুক্রমিক জিনগত রোগ । হিমোফেলিয়া রোগের লক্ষণ
হলো রোগীর রক্তপাত বেড়ে যায়; মহিলাদের মাসিকে দীর্ঘদিন ধরে রক্ত ঝরা, সময়ে সময়ে নাক বা দাঁত দিয়ে রক্ত বের হওয়া, দাঁতের অপারেশনের পর প্রচুর রক্তপাত হওয়া এবং প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া । এ রোগ হলে রক্ত জমাট বাঁধতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যহত হয়। শরীরে কোথাও কেটে গেলে সহজে রক্তপাত বন্ধ হয় না। কারণ, রক্ত জমাট বাধার উপাদান রক্তে কম থাকে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিশ্বে প্রতি ১০ হাজার জনে একজন হিমোফিলিয়ায় রোগে আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশে কতজন হিমোফিলিয়া রোগী আছে তার সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও প্রায় ১০ হাজার হিমোফিলিয়া রোগী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। আর রোগটি সাধারণত পুরুষদেরই দেখা যায়।
বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস (১৭ এপ্রিল) উপলক্ষে আয়োজিত এক অনলাইন সেমিনারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব হিমোফিলিয়ার সভাপতি ডা. মো. সালাউদ্দিন শাহ এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব হিমোফিলিয়ার সহ-সভাপতি ডাক্তার জিনাত আরা। বিশিষ্ট অতিথি ছিলেন এশিয়ান প্যাসিফিক আইসল্যান্ডার ক্যানসাস ডেমক্রেটিক পার্টি, ইউএসএ-এর চেয়ারম্যান রোটারিয়ান রেহান রেজা। বিশেষ অতিথি ছিলেন রোটারি ইন্টারন্যাল ডিসট্রিক ৩২৮১, বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী গভর্নর রোটারিয়ান এম খায়রুল আলম, খুলনা মেডিকেল কলেজের কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লিয়াকত হোসেন তপন, রোটারি ক্লাব অব তুরাগ উত্তরার প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান মো. মতিউর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক ডা. মো. শাফিউর রহমান। আলোচনায় বক্তারা জানান, ৮৫ শতাংশ রোগীর হিমোফেলিয়া-এ এবং ১৫ শতাংশ রোগীর হিমোফেলিয়া-বি হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্তদের সবসময় সচেতনতার সঙ্গে চলাফেরা করা উচিৎ। যেন আঘাতে রক্তক্ষরণ না ঘটে। আক্রান্ত হলে রোগীকে রক্ত দিতে হবে। কারণ রক্ত থেকে তৈরি ফ্রেশ উচিৎ। যেন আঘাতে রক্তক্ষরণ না ঘটে। আক্রান্ত হলে রোগীকে রক্ত দিতে হবে। কারণ রক্ত থেকে তৈরি ফ্রেশ ফ্রোজেন প্লাজমা এ রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে সক্ষম। তবে ফ্রেশ ফ্রোজেন প্লাজমা তৈরিতে অনেক রক্ত ও বেশ সময় লাগে। প্লাজমা দেয়ার থেকে ফ্যাক্টর দেয়ার রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। এতে রোগীরা প্লাজমা বাহিত অনেক রোগ থেকে মুক্ত থাকবে। রেহান রেজা বলেন, সঠিক সময় সঠিকভাবে চিকিৎসা দিতে পারলে হিমোফিলিয়া সুস্থ করে তোলার সম্ভব। হিমোফিলিয়া রোগীদের সহায়তার জন্য একটি কল্যাণ তহবিল করার আহবান জানান। প্রবাসীদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।এম এ ওয়াব বলেন, হিমোফিলিয়া রোগের চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। এসব রোগীকে স্বল্পমূল্যে চিকিৎসার দেয়ার কাজ করে যাচ্ছে ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব হিমোফিলিয়া। তিনি বলেন, অসহায় মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি ধনীদের এগিয়ে আসতে হবে। কারণ সঠিক চিকিৎসা পেলে হিমোফিলিয়া রোগীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।