ডেস্ক রিপোর্ট : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২১টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৩ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী।
শনিবার রাতের ওই দুর্ঘটনায় দেড় শতাধিক দগ্ধ ও আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে শ্রমিক, পুলিশ সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা রয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অনেককে বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ওই ডিপোতে ৫০ হাজারের বেশি কনটেইনার রয়েছে। কেমিক্যাল কনটেইনার থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগুন লাগার পর কনটেইনারগুলো একের পর এক বিস্ফোরিত হতে থাকে। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে তিন-চার কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। আশপাশের বাড়ি-ঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে।
অগ্নিদগ্ধদের জরুরি চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামের সব চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য।
রোববার সকাল পৌনে ৮টার দিকে এ রিপোর্ট লেখার সময় চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিস ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন ইউনিট যোগ দিয়েছে। এ পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট কাজ করছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, রাত বাড়ার সঙ্গে একের পর এক গুরুতর আহতদের আনা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আহতদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় জরুরি বিভাগে তাদের নাম তালিকাভুক্ত না করেই আঘাত অনুসারে তাদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।
সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. রুবেল রানা জানান, ফায়ার সার্ভিসের কাছে রাত ৯টা ২৫ মিনিটে আগুনের খবর দেওয়া হয়। এরপর সেখানে প্রাথমিকভাবে আটটি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে। পরে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন ইউনিট যোগ দেয়।
সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন জানিয়েছেন, কেমিক্যালের কনটেইনার থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে একের পর এক কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার সময় সেখানে কয়েকশ শ্রমিক কাজ করছিলেন। আহত-দগ্ধ বেশিরভাগ লোককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার এসআই নাসির উদ্দিন জানান, কনটেইনার ডিপোটিতে রপ্তানি পণ্য মজুত রাখা হতো। আগুনের খবর পেয়ে মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
তিনি জানান, দুর্ঘটনা এড়াতে ডিপোর প্রবেশদ্বারে লোকজন চলাচল বন্ধের পাশাপাশি স্থানীয় এলাকাবাসীকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে এলাকার মসজিদে মাইকিং করা হচ্ছে।
কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের ফায়ারম্যান নাজমুল হাসান বলেন, কুমিরা ফায়ার সার্ভিস রাত ১০টার দিকে প্রথম ওই কনটেইনার ডিপোতে আগুনের খবর পায়। আগুন নেভানোর জন্য একটি টিম ঘটনাস্থলে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটে।