• Thu. Nov 21st, 2024

উতল ফেন (আশরাফ পিন্টু)

ঘুম ভাঙতেই সন্ধান পাশ ফিরে কম্বলের নিচে হাতড়িয়ে কবিতাকে খুঁজতে থাকে। কিন্তু কোথাও খুঁজে পায় না। মেজাজটা বিগড়ে যায় সন্ধানের। ক’দিনমাত্র বিয়ে হয়েছেÑ ঠিকমতো বৌকে কাছে পাচ্ছে না। সন্ধ্যারাতে শোয়ামাত্রই ঘুমিয়ে পড়ে কবিতা। লম্বা একটা ঘুম দেবার পর শেষরাতে কাছে পায় ওকে। নব দা¤পত্য জীবনে শুধু একবার কাছে পেলে কী চলে?
সন্ধান বিছানা থেকে উঠে আলো জ্বালায়। ঘড়িতে দেখে দুটো চলি­শ বাজে। কোথায় গেল কবিতা? বাথরুমের দিকে এগোয়। নাহ! নেই। বাথরুম সেরে সন্ধান আবার রুমে ফেরে। এমন সময় কিচেন থেকে থালা-বাসন নাড়াচাড়ার শব্দ কানে আসে।

সন্ধান কিচেনে ঢুকে দেখে কবিতা বেসিনে থালা-বাসন মাজছে। পাশে গ্যাসের চুলায় হাড়িতে ভাত চড়ানো। ওর খেয়ালই ছিল না রমজান মাস শুরু হয়েছে। সন্ধানের দিকে চোখ পড়তেই কবিতা মুচকি হেসে ভাতের হাড়ির ঢাকনা খুলে খুন্তি দিয়ে ভাতের ভিতরটা নাড়িয়ে দেয় ।

-আমি তোমাকে খুঁজছি আর তুমি এখানে?
-রোজা থাকবে নাকি আজ? কবিতা সন্ধানের কথা গায়ে না মেখে কাজ শেষে হাড়ির পর ঢাকনাটা বসিয়ে দেয়।
-না। চলো।
-দেখছো না রান্না করছি। আজ হবে না ।
-কেনো?
-রোজা থাকব। তুমিও থাকো।
-না। ল²ীটি, তুমি আমার কষ্টটা বুঝতে পারছ না…
সন্ধান একটু নরম হয়। পেছন থেকে কবিতার দু বাহু জড়িয়ে ধরে।
-কী করছো? ছাড়ো।
-না। সন্ধান আরো নিবিড় হয়। ঠোঁটে ঠোঁট গুজে দেয়।
কবিতা বাধা দিতে গিয়েও হেরে যায়।

ওদিকে ভাতের ফেন উতলিয়ে অ্যালুমিনিযামের ঢাকনাটা প্রচণ্ড শব্দে পড়ে যায় মেঝেতে। হাড়ির চারিদিকে ফেন উতলিয়ে পড়তে থাকে। ধীরে ধীরে ফেনের উতলানো স্তিমিত হয়ে আসে। তবে তখনো হাড়ির কানা চুইয়ে গরম ফেনের ফোঁটা পড়তে থাকেÑ
টপ! টপ!! টস!!!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *