ছোট্টমনিরা তোমরা সকলেই আমার আন্তরিক স্নেহ ও আর্শিবাদ নিও। কেমন আছো তোমরা? আশাকরি সর্বশক্তিমান ভগবানের অশেষ করুণায় সবাই ভালো আছো। আমার আশির্বাদে তোমরা অনেক বড় হবে। বিদ্যান হয়ে দেশ ও দশের সেবা করবে। প্রকৃত মানুষের মতো মানুষ হবে। আমি সাধারণ পরিবারের মেয়ে হিসাবে জন্মগ্রহণ করে তখনকার সামাজিক নিয়মে লেখাপড়া করতে পারিনি। মনের মধ্যে প্রচন্ড আগ্রহ ছিল লেখাপড়া শেখার। তাই শিশু শিক্ষা বই বাবার কাছ থেকে নিয়ে অক্ষর জ্ঞান লাভ করে ধীরে ধীরে লেখার চেষ্টা করেছি। জীবনে কোনদিন স্কুলে যাবার সুযোগ আমার হয়নি। তখনকার নিয়মে অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে শশুরবাড়িতে পাঠালে সেখানেও শিক্ষার কোন সুযোগ হয়নি। ঘর সংসারের দায়িত্ব মিটিয়ে সময় করে একটু লেখাপড়া করেছি নিজে নিজে।
এভাবে মনের মধ্যে কবিতা গল্প লেখার সাধ জাগে। আপন মনে কাগজে লিখে যাই। সময় গড়িয়ে চলে লেখা প্রকাশ করার কোন মাধ্যম ও সুযোগও পেতাম না। একসময় সাহিত্যিক ও প্রকাশক মানিক মজুমদারকে পেয়ে যাই ভাগ্যগুণে। সেই থেকে এখন আমার ১২টি একক বইসহ দেশ-বিদেশে অনেক লেখা প্রকাশ হয়েছে। সরকারি সম্মানী, বাড়ি ও অনেক গুণী মানুষ এবং এম পি, ডিসি সহ সবাই আমার প্রতি এখন সুদৃষ্টি রাখেন। অন্তিম কালে এটাই বড় প্রাপ্তি।
যখন এই চিঠিখানা পড়িবে তখন ভাবিবে কে আমি? তখন হয়তো তোমাদের কাছ থেকে আমি অনেক অনেক দূরে চলে যাব। কেউ আমাকে দেখতে পাবে না। মানুষের আয়ু কেউ নির্ণয় করিতে পারে না। প্রকৃতির নিয়মে একদিন না একদিন যেতেই হবে। এই শূন্য বুকখানা কি দিয়ে ভরিয়ে তুলবো বুঝতে পারি না। তাই তোমাদের কথা মনে করে নিজেকে একটু সান্ত্বনা দিই মাঝে মাঝে। আমি তোমাদের কিছুটা আপন আবার কিছুটা পরও হতে পারি। আমার মনের সমস্ত স্নেহ আমি তোমাদেরকে উজার করে দিলাম। আমি কোন সময়ই ছোটমণি তোমাদের ভুলতে পারি না কারণ আমি নিঃসন্তান তাই। তোমাদের আগামীর সুগম পথের জন্য মঙ্গল কামনা করে তোমাদের কাছ থেকে বিদায় নিলাম আমি অভাগিনী মা