গ্রীষ্মের এই তীব্র গরমে তরমুজ হতে পারে আদর্শ এক উপকারী ফল। রসালো এই ফলের প্রায় ৯০ শতাংশই থাকে পানি। তাই গরমে পানির চাহিদা যেমন মেটাতে পারে এই ফল, তেমনি স্বাদ ও পুষ্টিতেও অনন্য এটি। জেনে নিন তরমুজ শরীরের জন্য কতটা উপকারী।
অ্যাজমা প্রতিরোধ করে
বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের ফ্রি র্যাডিকেল অ্যাজমার জন্য দায়ী। ভিটামিন সি সহ কিছু অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অ্যাজমা রোধে ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে তরমুজে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপকারী।
রক্তচাপ কমায়:
২০১২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, তরমুজ মুটিয়ে যাওয়া বা হারইপারটেনশনে থাকা মাঝবয়সী মানুষের রক্তচাপ কমায়। গবেষকরা বলেছেন তরমুজে থাকা এল- সাইট্রোলিন ও এল- আরজিনিন নামের দুই ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রক্তনালী সচল রাখে। তরমুজে থাকা লাইকোপিন নামের আরেকটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
ক্যানসার প্রতিরোধ করে
আমেরিকার ন্যাশনাল ক্যানসার ইন্সটিটিউটের মতে, ফ্রি র্যাডিকেল শরীরে কয়েক ধরনের ক্যানসার তৈরি করতে পারে। এক্ষেত্রে তরমুজে থাকা ভিটামিন সি এর মতো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেলের সাথে লড়ে ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
হজমের জন্য উপকারী
তরমুজে পানির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে, সেই সাথে থাকে আঁশ। তাই তরমুজ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিক রাখে।
পানির ঘাটতি মেটায় তরমুজে প্রায় ৯০ ভাগ পানি যেমন থাকে, তেমনি এতে পটাশিয়ামের মতো ইলেকট্রোলাইট থাকে। তাই এই ফল গরমে বেশ স্বাস্থ্যকর। গরমে স্বস্তি পেতে তরমুজ টুকরো করে খান বা জুস বানিয়ে পান করতে পারেন।
মস্তিষ্কের জন্য উপকারী
তরমুজে থাকা কোলিন নামের একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের জন্য উপকারী। মাংসপেশির মুভমেন্ট, দেহকোষের মেমব্রেন গঠনে এবং মস্তিস্ক গঠন ও নার্ভের কার্যকারিতা বাড়াতে কোলিন বেশ সহায়ক।
ত্বকের জন্য উপকারী
তরমুজে যে ভিটামিন সি থাকে তা শরীরে কোলাজিন তৈরিতে সহায়তা করে। আর এই কোলাজিন দেহকোষ তৈরি ও রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। ভিটামিন সি ক্ষতও সারায়।
তরমুজ দিয়ে ঘরে তৈরি পানীয় দেখতেও হয় সুন্দর।
গরম যত বাড়ছে, ততই তরল খেতে বলছেন সকলে। সারা দিন জল খাওয়া ভাল। তবে স্বাদ বদলের ব্যবস্থাও রাখা যেতে পারে। এমন সময়ে প্যাকেটজাত ফলের রস আর শরবত খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। কিন্তু তাতে মেশানো থাকে অঢেল চিনি। ফলে বাড়িতে নিজের মতো করে ব্যবস্থা করে নেওয়াই ভাল। যাতে স্বাস্থ্যরক্ষা হয় আরও ভাল ভাবে।
গরমের ফল তরমুজ। এতে জলের পরিমাণও অনেক। এই ফল দিয়েই বাড়িতে বানিয়ে নেওয়া যায় একটা আরামদায়ক পানীয়। তরমুজের লাল রং তাকে দেখতেও করবে সুন্দর।
কী করবেন?
ছোট ছোট টুকরো করে কেটে ফেলুন ফল। বীজ ছাড়িয়ে একসঙ্গে মিক্সারে দিয়ে দিন। ঘেঁটে নিন। ব্যস। তাতেই বাজিমাত। থকথকে তরমুজের সঙ্গে সামান্য জল আর স্বাদ মতো নুন-চিনি দিয়ে দিন সেই পাত্রে। আর এক বার ঘেঁটে নিয়ে আলাদা আলাদা গ্লাসে ঢেলে নিন ঘরে তৈরি তরমুজের কুলার। এক ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিন গ্লাসগুলো।
পরিবেশন করার আগে সামান্য পাতিলেবুর রস মিশিয়ে চামচ দিয়ে ঘেঁটে দিন শরবত।