* রবীন্দ্র-মৃনালিনী দেবীর প্রথম কন্যা মাধুরীলতার (বেলা দেবী) কবি বিহারীলাল চক্রবর্তীর পুত্র মজফরপুর আদালতের প্রখ্যাত ব্যবহারজীবী শরৎচন্দ্র চক্রবর্তীর সঙ্গে ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে বিবাহ হয়। কবির প্রথম পুত্র রথীন্দ্রনাথের (১৮৮৮-১৯৬১) তার পিতার খুড়তুতো ভাই জ্ঞানন্দ্রেনাথের নাতনি বিনয়নী দেবীর বিধবা কন্যা প্রতিমা দেবীর সঙ্গে ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে ২৭ জানুয়ারি শুভ বিবাহ সুসম্পন্ন হয়।
ক্স রবীন্দ্রনাথের দ্বিতীয় কন্যা রেণুকাবালার (রাণী) (১৮৯১-১৯০৩) মাত্র এগারো বছর বয়সে সত্যেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সঙ্গে তার বিবাহ হয়। তারা নিঃসন্তান ছিলেন।
ক্স রবীন্দ্রনাথের তৃতীয়া কন্যা মীরা দেবী (অতসী) ১৯০৮ সালে নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হন।
ক্স ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে কবি পতœী মৃনালিনী দেবী মাত্র ত্রিশ বৎসর বয়সে পরলোক গমন করেন। তখন কবির বয়স ছিল মাত্র ৪১ বছর।
ক্স মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে রবীন্দ্রনাথকে তার স্ত্রী কন্যা সহ শিলাইদহে জমিদারি দেখাশোনার গুরুদায়িত্ব অর্পণ করে শিলাইদাহে পাঠিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে নীলকর সাহেবের তৈরি বিলাসবহুল কুঠিবাড়িতে থাকতেন। কুঠিবাড়ির নাম ছিল ‘শেলী’। এই কুঠিবাড়ির সামান্য দূরে পদ্মা নদীর উপর জমিদার বাবুর পেলাই বোট বাঁধা থাকতো। পদ্মার সেই বোটেই কবি সারাদিন সাহিত্য চর্চা করতেন।
ক্স রবীন্দ্রনাথের এমনই দুর্ভাগ্য যে তার পরিবারের মৃত্যু মিছিল বারে বারে তাকে চরম আঘাত হেনেছে। বালক রবির বয়স মাত্র চোদ্দ সেই সময় তার মাতা সারদাসুন্দরী দেবী মারা যান। সালটা ছিল ১৮৭৫ এবং তারিখ ছিল ১০ মার্চ। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য সৃজনের অন্যতমা প্রেরণাদাত্রী তার পরম আদরের বৌঠানকাদম্বরী দেবী ১৮৮৪ সালে আত্মহত্যা করেন। ১৮৯৯ সালে কবির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু হয়। কবির বড় দিদি সৌদামিনী যিনি মাতৃহারা শিশু রবীন্দ্রনাথকে কোলে পিঠে মানুষ করেছিলেন তার স্বামী সারদাপ্রসাদের মৃত্যু হয় যখন রবীন্দ্রনাথের শুভ বিবাহের কার্যাদি চলছিল। ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে কবি পত্মী মৃনালিনী দেবীর মৃত্যু, মধ্যম কন্যা রেণুকা দেবীর মৃত্যু ১৯০৩ সালে। পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু ১৯০৫ সালে। ১৯১৮ সালে জ্যেষ্ঠা কন্যা মাধুরীলতার (বেলা দেবী) মৃত্যু এবং ১৯০৮ সালে কবির কনিষ্ঠ পুত্র শমীন্দ্রনাথের মৃত্যু, কবি হৃদয়ে বজ্রাঘাতের সমতুল্য হয়েছিল।
ক্স কবি রবীন্দ্রনাথ তখন অসুস্থ। কালিংপং থেকে জোড়াসাঁকোর বাড়িতে ভাইফোঁটা দেবার জন্য ছুটে এসেছিলেন তখন তার একমাত্র জীবিত বোন বর্ণকুমারী দেবী।
ক্স ১২৯০ বঙ্গাব্দে ২৪ অগ্রহায়ণ রবীন্দ্রনাথের শুভ বিবাহ সম্পূর্ণ হয়েছিল। জোড়াসাঁকোর বাড়িতেই বিয়ের কনে মৃণালিনী দেবীকে এনে রাখা হয়েছিল।
ক্স গুনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পত্মী সৌদামিনী দেবী রবীন্দ্রনাথকে আইবুড়ো ভাত খাইয়েছিলেন।
ক্স জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির ব্রাহ্মোৎসব দালানে রবীন্দ্রনাথের শুভ বিবাহের যাবতীয় অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হয়েছিল।
ক্স রবীন্দ্রনাথের শুভ বিবাহের পুরোহিত ছিলেন হেরম্বনাথ তর্করতœ।
ক্স রবীন্দ্রনাথের জননী সারদা দেবী ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেছেন।
ক্স রবীন্দ্রনাথের মা রবীন্দ্রনাথকে ‘কালো’ বলে ডাকতেন।
ক্স রবীন্দ্রনাথের জননী সারদা দেবী ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে ৮ মার্চ বাহান্ন বছর বয়সে পরলোক গমন করেন। তখন রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল মাত্র চৌদ্দ।
ক্স রবীন্দ্রনাথের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে ১৯ জানুয়ারি বেলা ১১টায় পরলোক গমন করেন। যখন তার পিতৃবিয়োগ হয় তখন তার বয়স ছিল চুয়ালিশবছর।
ক্স ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের ৫ ফেব্রুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মোৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেলুড়মঠে গিয়েছিলেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু।
ক্স বিষ্ণু চক্রবর্তী ছিলেন রবীন্দ্রনাথের প্রথম সংগীত শিক্ষাগুরু। তার কাছেই রবীন্দ্রনাথের শাস্ত্রীয় সংগীতের হাতেখড়ি হয়েছিল।
ক্স শিল্পী হওয়ার একবুক স্বপ্ন নিয়ে বাকুড়ার এক অজ পাড়া গাঁ থেকে মাত্র উনিশ বছর বয়সে শান্তিনিকেতনে পা রাখেন রামকিঙ্কর বেইজ। বাঁকুড়ার যুগীপাড়ায় নিতান্ত দরিদ্র ঘরের সন্তান হলেও শিল্প প্রতিভা ছিল তার সহজাত। নতুবা যে পরিবার এবং পরিবেশে তার জন্ম সেখানে কারো পক্ষে এমন প্রথম শ্রেণীর শিল্পী ও ভাস্কর হয়ে ওঠা একপ্রকার অসম্ভব। শিল্পীচার্য নন্দলাল বসু, বিনোদবিহারী এবং রবীন্দ্রনাথ রামকিঙ্করের শিল্পচর্যার গুরুত্ব উপলব্ধি করলেও শান্তিনিকেতনের তথাকথিত ভদ্রসমাজের একটা বড়ো অংশই রামকিঙ্করকে প্রকৃত শিল্পীর মর্যাদা দানে প্রস্তুত ছিলেন না। শান্তিনিকেতনে পদার্পনের দিন থেকে শুরু করে জীবন থেকে চিরদিনের জন্য ছুটি নেবার সময় পর্যন্ত রামকিঙ্করকে বহুবার নানা লাঞ্ছনা ও কটুবাক্যের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তাঁকে ব্রাত্য করে রাখার প্রয়াস চালানো হয়েছে কোনো কোনো পক্ষ থেকে। তাঁকে ‘ছোটোলোক’ বলে গালিগালাজ করতেন শান্তিনিকেতনের তথাকথিত ভদ্রঘরের সতীর্থরা। তাচ্ছিল্য ও অবজ্ঞা প্রদর্শনের কোনো মাত্রাজ্ঞান ছিল না তাদের। বাঁকুড়ার বরেণ্য সন্তান সংবাদপত্র জগতের কিংবদন্তী পুরুষ স্বয়ং রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে একপ্রকার হাত ধরে ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে শান্তিনিকেতনে নিয়ে এসেছিলেন। ফাইন আর্টসের ছাত্র হিসেবে কলাভবনে শান্তিনিকেতনে তাঁকে ভর্তি করে দিলেন রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়। রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথের অন্যতম সুহৃদ বলে খ্যাত এবং তিনি প্রবল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ছিলেন এবং সেই কারণেই তাঁকে ঘাটানোর সাহস দেখাতে পারেননি কেউ। বড়ো শিল্পী হওয়ার অত্যুগ্র বাসনা ছিল রামকিঙ্করের। তাই নিরন্তর সংগ্রাম করে তিনি জীবনে চলার পথ অতিক্রম করেছিলেন, প্রবল বাধা ও প্রতিবন্ধকতার পাহাড়কে তুচ্ছ জ্ঞান করেছিলেন। জীবনের প্রতি পদক্ষেপে নিন্দা ও বিতর্কের ঝড় ওঠেছে। ধূলোমাখা খালি দুটি পা, হাতে ফুলকাটা রঙিন পিনের বাক্সো, পরনে হাঁটু অবধিধুতি এবং সাদা জামা গায়ে একমাথা কোঁকড়া চুল নিয়ে অতি হতদরিদ্র ঘরের ছেলেকে নিজেদের সতীর্থ ভাবতে লজ্জা ও ঘৃণাবোধ করছিল কলাভবনের ছাত্ররা। শুধু কলাভবনের ছাত্ররা নয় তাদের অনেক অভিভাবক/ অভিভাবিকারাও প্রকাশ্যেই তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। দুর্বার স্বপ্ন নিয়ে কলাভবনে আসা রামকিঙ্করের নিত্যদিনের সতীর্থদের কাছ থেকে অবজ্ঞা, তাচ্ছিল্য ও ঘৃণা প্রদর্শন রামকিঙ্করের অঙ্গের ভূষণ হয়ে গেছিল। এইখানেই শেষ নয়, কলাভবনের এক পুরাতন ছাত্র একদিন রামকিঙ্করের কাছে পেয়ে বলে উঠলেন, ‘এই যে ছেলেটা তুই তো পরামানিকের ছেলে। তোর ক্ষুর আর জলের ভাঁড়টা কোথায় লুকালি? আমার গোঁফ দাড়িটা একটু কামিয়ে দিবি না?’ নন্দলাল বসুর কানে গিয়েছিল এসব কথা। তিনি সব শুনে একদিন রামকিঙ্করকে কাছে ডেকে এনে পরম স্নেহভরে বললেন, ‘এসব ছেঁদো কথায় তুই কান দিস্ না, অনেক বড় হতে হবে তোকে। তোর স্বপ্ন সার্থক করতে হলে তোকে এসব ছোটোখাটো ঘটনাকে অবজ্ঞা করতে হবে।’
রামকিঙ্কর একদিন স্বপ্নের ঘোরের মধ্যে এক মূর্তি দর্শন করলেন এবং সেই মূর্তিকেই তিনি মাটির মূর্তিতে ফুটিয়ে তুললেন আশ্চর্যভাবে। তথাকথিত ভদ্রলোকেরা এই মূর্তি দেখে ছিঃ ছিঃ করতে লাগলেন। রবীন্দ্রনাথের কানে গেল এইসব বৃত্তান্ত। তিনি একদিন নিজেই রামকিঙ্করের অঙ্কিত মাটির মূর্তিটি দেখতে গেলেন। রবীন্দ্রনাথ মূর্তিটি খুব মনোযোগ সহকারে চাক্ষুষ করলেন। অবাক হলেন রামকিঙ্করের অপূর্ব মূর্তি নির্মাণের কৌশল দেখে। তিনি তখনই রামকিঙ্করকে ডেকে পাঠালেন। কবি তাকে ডেকে পাঠিয়েছেন শুনে রামকিঙ্কর কবির কাছে ছুটে গেলেন। ভদ্রজনেরা মনে করলেন যাচ্ছেতাই পেত্মীর মতো মূর্তি নির্মাণ করার অপরাধে কবিগুরু নিশ্চয় তাকে তিরস্কার করবেন এবং ‘কলাভবন’ থেকে তাকে বহিষ্কৃত করবেন। কবির কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই কবি রামকিঙ্করের কাছে জানতে চাইলেন যে, কিসের মূর্তি তিনি গড়েছেন ?’ রামকিঙ্কর সবিনয়ে বললেন, ‘কিসের মূর্তি আমি গড়েছি আমি নিজেই তা জানি না গুরুদেব, স্বপ্নের ঘোরের মধ্যে ঐ মূর্তি আমার কাছে এসেছিল। আমি তাকেই রূপ দিয়েছি মাত্র।’ কবিগুরু রামকিঙ্করের প্রত্যুত্তর শুনে বললেন, তুই তোর মূর্তি দিয়ে, ভাস্কর্য দিয়ে আমাদের এই শান্তিনিকেতনের সবখানটাই ভরিয়ে দে। আমি বলছিতোর মন যা চাই ত্ইু তাই নির্মাণ করবি, কারো কথায় কান দিবি না। একটা নয়, একশোটা মূর্তি নির্মাণ কর- আমি তোর সঙ্গে আছি।’ কবিগুরুর কাছ থেকে আশ্বাস বাণী শোনার পর অধিকতর উন্মাদনায় রামকিঙ্কর ঝাঁপিয়ে পড়লেন তার সৃষ্টিকর্মে। প্রখর খরতাপে দগ্ধ হচ্ছে শান্তিনিকেতনের আকাশ বাতাস, তখন ঠান্ডা ঘরে বসে না থেকে কাঠফাটা রোদে উন্মুক্ত আকাশের নীচে বসে একটার পর একটা অভিনব চিত্র নির্মাণ করেই চলেছেন রামকিঙ্কর। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করার প্রশংসা পত্র পেয়েছেন তিনি, আর কি চাই ? আর তো পিছনে তাকাবার অবকাশ নেই। এবার তো তাকে নতুন নতুন সৃজনশীলতায় মেতে থাকতেই হবে। সারাজীবন তিনি শান্তিনিকেতনেই ছিলেন। নানা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ কটাক্ষ তার উপর বর্ষিত হলেও রামকিঙ্করকে কিছুতেই দমানো যায়নি- তিনি ‘সৃষ্টি সুখের উলাসে’ মত্ত হয়েই ছিল বরাবর। এমনকি তাকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয়েছে। তবু তিনি তার সাধের শান্তিনিকেতন ছেড়ে, তার সাধনার ক্ষেত্র, তার জীবনের পরম আশ্রয় শান্তিনিকেতন ছেড়ে কোথাও যাননি। তবে আক্ষেপের বিষয় হল জীবদ্দশায় (১৯০৬-১৯৮০) দেশের মানুষের কাছে তার যে প্রত্যাশা ছিল তার ছিটেফোঁটাও পাননি তিনি। প্রত্যাখ্যান, তাচ্ছিল্য, অবজ্ঞা ও ঘৃণা তাকে পিছু ছাড়েনি কোনোদিন। যখনই তিনি তথাকথিত ভদ্রলোকদের বাক্য যন্ত্রণায় কাতর হয়েছেন তখনই কবির কাছে ছুটে গেছেন। না, অভিযোগ জানাতে নয়, সান্তনার প্রলেপ নিতে।
ক্স ১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর ভবতারিণী দেবীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের বিবাহ হয়। বিয়ের পর ভবতারিণী দেবীর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় মৃণালিনী দেবী। মৃণালিনী দেবীর ডাক নাম ছিল ‘ফুলি’। ফুলির আর এক নাম পদ্ম। ঠাকুরবাড়িতে মৃণালিনী দেবীকে আচার্য হেমচন্দ্র বিদ্যারত্ম সংস্কৃত পড়াতেন। আবার কখনো কখনো বলেন্দ্রনাথ স্বয়ং নববধূকে সংস্কৃত পড়াতেন। দেবেন্দ্রনাথের তত্ত¡বধানে লরেটো স্কুলে মৃণালিনী দেবীর ইংরাজী মাধ্যমের শিক্ষা দীক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। শ্লেট, খাতা পত্রাদি, বই ও টিউশন ফি বাবদ প্রতি মাসে খরচ হত মাত্র পনেরো টাকা।
ক্স প্রখ্যাত আইনবিদ কামিনীকুমার চন্দর পুত্র এবং লন্ডনস্কুল অব্ ইকোনোমিক্সের ছাত্র অনিল কুমার চন্দ্র কিছুকাল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যাক্তিগত সচিব ছিলেন। অবশ্য পেশায় তিনি ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। আর তিনিই ছিলেন স্বাধীন ভারতের লোকসভার প্রথম সাংসদ। তার অগ্রজরা এবং তার পত্মীও ছিলেন স্ব স্ব ক্ষেত্রে কৃতি। এই অনিল কুমার চন্দের স্ত্রী রানী চন্দ তিনি একজন নৃত্যশিল্পী, চিত্রশিল্পী এবং সাহিত্যিকও ছিলেন।
ক্স জীবনের প্রথম বই রবীন্দ্রনাথ পড়েছিলেন কৃত্তিবাসের রামায়ণ। বাল্মীকি রচিত অনুষ্ঠুপ ছন্দের রামায়ণ পড়েছিলেন বাবার সাথে হিমালয়ে বেড়াতে গিয়ে।
ক্স বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রবীন্দ্রনাথকে ‘গুরুদেব’ বলে সম্বোধন করতেন এবং রবীন্দ্রনাথও তেমনি তার কবি প্রতিভাকে স্বীকৃতি জানাতে কুন্ঠিত হননি। রবীন্দ্রনাথ নজরুলের ‘ধূমকেতু’ কে আশীর্বাদ জানিয়ে লিখেছিলেন,- ‘আয় চলে আয় রে ধূমকেতু / আঁধারে বাঁধ অগ্নি সেতু / দুর্দিনের এই দুর্গাশিরে, উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন / অলক্ষণের তিলক রেখা / রাতের ভালে হোক না লেখা / জাগিয়ে দে রে চমক মেরে, আছে যারা অর্ধচেতন’।
ক্স কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার রচিত ‘বসন্ত’ গীতিনাট্যটি কাজী নজরুল ইসলামকে উৎসর্গ করেন।
ক্স ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে নজরুল তার শ্রেষ্ঠ কবিতা সংকলন ‘সঞ্চিতা’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথকে উৎসর্গ করেন। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ‘নতুন চাঁদ’ গ্রন্থের ‘অশ্র“পুষ্পাঞ্জলি’ ও ‘কিশোর রবি’ এবং ‘শেষ সওগাত’ গ্রন্থের ‘রবি জন্মতিথি ’ কবিতা লেখেন নজরুল।
ক্স বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮০তম জন্মদিনে কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, ‘অশ্র“পুষ্পাঞ্জলি কবিতা’
‘চরণার বিন্দে লহ অশ্র“পুষ্পাঞ্জলি / হে রবীন্দ্র তব দীন ভক্ত এ কবির।
অশীতি- বার্ষিকা তব জনম উৎসবে / আসিয়াছি নিবেদিতে নীরব প্রণাম !
হে কবি সম্রাট, ওগো সৃষ্টির বিষ্ময় / হয়তো হয়নি আজও করুণা – বঞ্চিত।
সঞ্চিত আছে যে, আজো স্মৃতির দেউলে / তব স্নেহ করুণা তোমার মহাকবি।