• Tue. Nov 19th, 2024

বিধির লিখন (আশরাফ পিন্টু)

মৃতদেহটি এখনো হাসপাতালে পড়ে রয়েছে। লাশ গ্রহণের জন্য ছেলেকে খবর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার দেখা নেই।

জুয়েল জামা-কাপড় পড়ছে। দ্রুত যেতে হবে। সুমনা অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছে পার্কে। আগেই যেতে পারত কিন্তু হঠাৎ করে বাবার মৃত্যু সংবাদটা ফোনে শুনতে পেলো। সিদ্ধান্ত নিতেই এক ঘন্টা দেরি হয়ে গেল। সুমনা হয়তো আজকে বিয়ের ডেট ফাইনাল করবে। এমন শুভক্ষণে বাবার লাশ গ্রহণ করে মরবে নাকি ও?

জুয়েল পার্কে পৌঁছেই সুমনাকে জড়িয়ে ধরে। ঠোঁটে-মুখে চুমু খায়। আহ্লাদের স্বরে বলে, একটু দেরি হয়ে গেল ল²ীটি! বলো কী বলবে?
এমন সময় সুমনার হাঁচি চলে আসে। হাঁচির সর্দিকণা ছিটকে এসে জুয়েলের নাকে-মুখে পড়ে। জুয়েল পকেট থেকে রুমাল বের করে সর্দিকণাটুকু মুছতে মুছতে বলে, শরীর খারাপ করছে নাকি?
-হ্যাঁ। শ্বাসকষ্টও হচ্ছে মাঝে মাঝে। সুমনা জোরে জোরে নিঃশ্বাস টেনে বলে।
-কবে থেকে।
-এই তো সপ্তাহখানেক।
-ডাক্তার দেখিয়েছ?
-হ্যাঁ।
-কী বলেছে?
-ঠিক বলতে পারছে না। তাই ভাবছি তোমাকে নিয়ে হাসপাতালে যাবো। চারিদিকে যা অবস্থা। করোনা-টরোনা হলো…
-ছি! এমন কথা বলতে নেই। তোমার স্বাভাবিক সর্দিকাশি হয়েছে। জুয়েল সুমনার ঠোঁটে আঙুল রেখে ওকে থামিয়ে দিয়ে কাছে টেনে নেয়।
সুমনা ফিসফিসিয়ে বলে, তাই যেন হয়। চলো এখন। সুমনা জুয়েলের বাহু থেকে মুক্ত হয়ে উঠে দাঁড়ায়।
সুমনাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর ডাক্তার ওকে করোনা রোগী বলে সনাক্ত করেন। জুয়েলকে বলেন, আপনিও হয়তো আক্রান্ত হয়েছেন। কাল আপনারও টেস্ট হবে। এখন থেকে আপনারা দু’জনই হাসপাতালে থাকবেন।
ডাক্তারের কথা শুনে জুয়েল নির্বাক হয়ে যায়। মনের অজান্তে চোখ দিয়ে অশ্র“ গড়িয়ে পড়তে থাকে। ভাবেÑ নিজেকে সেফ রাখার জন্য জন্মদাতা পিতার লাশ গ্রহণ করলাম না।

অথচ…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *